নিউজসুপার,কলকাতা, ২৭শে মার্চ, ২০২৫:
রেলপথে অনুপ্রবেশ একটি গুরুতর সমস্যা যা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, সমাজ এবং সামগ্রিক রেল পরিষেবার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি একটি সামাজিক অভিশাপ, যা প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি যদি দুর্ঘটনাগুলি প্রাণঘাতী না হয়, তবুও তা গুরুতর আঘাত ও স্থায়ী অক্ষমতার সৃষ্টি করে, যা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির পরিবারকে দীর্ঘমেয়াদী দুর্ভোগে ফেলে।
এছাড়াও, এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অর্থহীন কর্মকাণ্ড রেল পরিষেবা ব্যাহত করে, যার ফলে ট্রেন চলাচলে দেরি ও বাতিলের ঘটনা ঘটে, যা লক্ষাধিক দৈনিক যাত্রী ও রেল ব্যবহারকারীদের ভোগান্তির কারণ হয়। অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত দুর্ঘটনাগুলি রেলের পরিকাঠামোরও ক্ষতি করতে পারে, যা রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বাড়িয়ে দেয়।
সম্প্রতি, সোদপুর ও চম্পাহাটি এলাকায় রেলপথে অনুপ্রবেশজনিত পরপর দুর্ঘটনা ট্রেন পরিষেবায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটিয়েছে এবং যাত্রী ও অনুপ্রবেশকারীদের নিরাপত্তা বিপন্ন করেছে। এই ঘটনাগুলির ফলে ট্রেন চলাচলে ব্যাপক বিলম্ব হয়েছে, যা নিয়মিত যাত্রীদের অসন্তুষ্টি বাড়িয়েছে।
রেল কর্তৃপক্ষ বারবার ঘটতে থাকা এই অনুপ্রবেশজনিত ঘটনাগুলি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। শিয়ালদহ বিভাগ সাধারণ জনগণের কাছে আবেদন জানাচ্ছে, রেললাইনের ওপর দিয়ে চলাফেরা থেকে বিরত থাকুন। রেলপথে অনুপ্রবেশ বেআইনি এবং এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যারা এই অপরাধে লিপ্ত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেল কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ বিকল্প ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করছে, যেমন—ফুট ওভারব্রিজ, লিমিটেড হাইট সাবওয়ে এবং বৈধ লেভেল ক্রসিং।
অনুপ্রবেশ রোধ করতে, রেল কর্তৃপক্ষ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে—জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ঘোষণাপত্র, পোস্টার ও প্রচারপত্র বিতরণ। শিয়ালদহ বিভাগ স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজকর্মীদের সাথে একযোগে কাজ করছে, যাতে মানুষকে রেললাইনে হাঁটার বিপদ সম্পর্কে সচেতন করা যায়।
শ্রী দীপক নিগম, ডিআরএম/ শিয়ালদহ, সাধারণ জনগণকে পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা রেলওয়ের নির্ধারিত পথ ব্যবহার করেন এবং নিজেদের ও রেল পরিষেবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তিনি জনগণের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে তারা এই প্রচেষ্টার সঙ্গে সহযোগিতা করেন এবং রেললাইনে হাঁটা থেকে বিরত থাকেন।
আমরা সবাই একসঙ্গে একটি নিরাপদ ও কার্যকর রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে পারি। রেলপথে অনুপ্রবেশের কারণ ও পরিণতি বুঝতে পারলে আমরা সকলে মিলে এই সামাজিক অভিশাপ দূর করতে পারব এবং একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারব।